সাতক্ষীরার ‘মাদক সম্রাট’ খ্যাত ইসমাইল অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সাতক্ষীরার সদর উপজেলার বৈকারী ও এর আশেপাশের ইউনিয়নে মাদক ব্যবসার রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল। ইসমাইল হোসেন (৪৫) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মিরগীডাঙ্গা গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয়দের কাছে ‘ইসমাইল সম্রাট’ নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন যাবৎ সে পুলিশ ও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দিনগত রাতে সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই সোহরাব হোসেনের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান চলাকালে ইসমাইলকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা নং- ৪৪, তারিখ ২৩/০১/২০১৮; জি.আর নং- ৪৪/১৮, ধারা ১৯(১) এর ৯(খ) অনুযায়ী মামলার পরোওয়ানা ছিল।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসলেও সম্প্রতি গ্রেপ্তার এড়াতে ও নিজেকে নিরাপদ রাখতে ইসমাইল হোসেন রাজনৈতিক পরিচয় জোটানোর চেষ্টা শুরু করে। তিনি জেলা বিএনপির শীর্ষ কয়েকজন নেতার সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে নিজেকে বিএনপি নেতা বা কর্মী হিসেবে প্রচার করতে থাকেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ছবিগুলো ব্যবহার করে তিনি এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও প্রশাসনের চোখে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল, মাদক মামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করা এবং একইসঙ্গে মাদক ব্যবসা আরও নির্বিঘ্নে পরিচালনা করা।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইসমাইলের মতো চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা এখন অর্থের জোরে বিএনপির বিভিন্ন কমিটিতে ঢোকার চেষ্টা করছে। সে নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজের ‘রাজনৈতিক পরিচয়’ বানাতে চাইছে। কিন্তু এরা দলের ভাবমূর্তির জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর।
বিএনপি পরিচয়ের আবরণে লুকিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ইসমাইলকে গ্রেফতারের হাত থেকে বাঁচতে পারেনি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে সাতক্ষীরা সদরের মিরগীডাঙ্গা গ্রাম থেকে আটক করে। এদিকে, ইসমাইল সম্রাটের গ্রেপ্তারের পর সাতক্ষীরার সীমান্ত ইউনিয়ন কুশখালী, বৈকারী ও আশপাশের ইউনিয়নেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই সোহরাব হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে পুরনো মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরের পর তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামিনুল হক জানান – ইসমাইল গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামী ছিল। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
 
																			 রিপোর্টার
																রিপোর্টার								 


















